১০ পয়েন্টে বাংলাদেশের ব্লু ইকোনমি সম্ভাবনাঃ
'ব্লু ইকোনমি' সময়ের আলোচিত টপিক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ খাতের মাধ্যমে চমকপ্রদ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে; সিঙ্গাপুর অন্যতম। ২০৪১ এর উন্নত বাংলাদেশ গঠনে সমুদ্রে পাওয়া ১,১৮,৮১৩ বর্গ কি. মি. এর যথাযথ ব্যবহারে সামুদ্রিক অর্থনীতি হয়ে উঠতে পারে ট্রামকার্ড। এ নিয়ে নিম্নোক্ত আলোকপাত।
(১) কিছুদিন আগে গৃহীত হয়েছে বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ বা ডেল্টা প্ল্যান-২১০০। এ মহাপরিকল্পনায় সমুদ্র অর্থনীতিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনায় নীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ৫ ধরনের কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে যার মধ্যে অন্যতম হলো সামুদ্রিক সম্পদের বহুমাত্রিক জরিপ দ্রুত সম্পন্ন করা। এর মাধ্যমে সরকার সমুদ্র অর্থনীতিকে কাজে লাগানোর জন্য প্রথম এবং প্রধান কাজটিই হাতে নিয়েছে।
(২) সমুদ্র বিজয়ের ফলে বাংলাদেশ যে অঞ্চলের মালিকানা পেয়েছে, সেখানে অন্তত চারটি ক্ষেত্রে কার্যক্রম চালানো হলে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ কোটি মার্কিন ডলার উপার্জন করা সম্ভব। ক্ষেত্র চারটি হলো তেল-গ্যাস উত্তোলন, মৎস্য সম্পদ আহরণ, বন্দরের সুবিধা সম্প্রসারণ ও পর্যটন। ‘ন্যাশনাল ওশেনোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউট’ বা নোয়ামি আয়োজিত এক প্রোগ্রামে বিশেষজ্ঞরা এ সম্পর্কে আলোচনা করেন।
(সূত্রঃ প্রথম আলো, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭)
(৩) সুস্থির সামুদ্রিক কার্যক্রমের নিমিত্তে বিশ্ব ব্যাংক কর্তৃক ব্লু প্রোগ্রামের ( PROBLUE) জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলারের ফান্ড গঠন করা হয়েছে। যার সাইনিং সম্পাদিত হয়েছে নভেম্বর ২০১৮ তে। বাংলাদেশে সামুদ্রিক খাতেও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের বিনিয়োগ সম্ভাবনা রয়েছে।
(৪) বঙ্গোপসাগর তীরে বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার ও থাই উপকূলে ১৪৫ কোটি মানুষের বাস। বাংলাদেশের অবস্থান কেন্দ্রে। ফলে এখানকার বিপুল অর্থনৈতিক সম্ভাবনার সুফল বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার ভালো সুযোগ রয়েছে।
(৫) বর্তমানে বাংলাদেশের ট্রলারগুলো উপকূল থেকে ৩৫-৪০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে মাছ আহরণ করে। কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চল ২০০ নটিক্যাল মাইল। আরও বিস্তৃত পরিসরে কাজ করে সমুদ্র অর্থনীতিতে দেশের অর্থনীতি সুদৃঢ় করার বিশেষ সুযোগ রয়েছে।
(৬) জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ( FAO) মতে, ২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বের যে চারটি দেশ মাছ চাষে বিপুল সাফল্য অর্জন করবে, তার মধ্যে প্রথম হচ্ছে বাংলাদেশ। এরপর থাইল্যান্ড, ভারত ও চীন। নতুন জলসীমার অধিকার পাওয়ায় ব্লু ইকোনমি প্রসারে বাংলাদেশের এ সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। তাই সমুদ্র খাতের এ সুযোগ লুপে নেয়াই এখন কাজ।
(৭) ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২১টি সদস্য দেশের সংগঠন 'ইন্ডিয়ান ওসেন রিম অ্যাসোসিয়েশন-IORA' এর সদস্য বাংলাদেশ। ব্লু ইকোনমি নিয়ে এ জোটের বিভিন্ন দেশ কাজ করছে। জোটের সদস্য থাইল্যান্ড বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মেরিন পণ্য উৎপাদনকারী দেশ। বাংলাদেশ অন্যদেশগুলোর সাথে একসাথে সামুদ্রিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, গবেষণা ও বাণিজ্য সহ বিভিন্নখাতে কাজ করতে পারে। মায়ানমারের সমস্যায় (মানব পাচারে) আক্রান্ত এ জোটের ৩ রাষ্ট্র বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া একসাথে কাজ করার সুযোগ তৈরী হয়েছে।
(৮) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (DCCI) হিসাব মতে, বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ৭০ শতাংশ আসে সমুদ্রে মাছ আহরণ, সামুদ্রিক খাদ্য ও বাণিজ্যিক সমুদ্র পরিবহন হতে। প্রায় ৩ কোটি লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এসব কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এর মধ্যে কেবল সামুদ্রিক মাছ আহরণে নিয়োজিত আছে ৫০ লাখ মানুষ। এ খাতে আধুনিকায়ন হলে এ সংখ্যা বাড়া কেবল সময়ের ব্যাপার।
(সূত্রঃজনকণ্ঠ, ২৭ জুলাই ২০১৭)
(৯) সিমেন্ট শিল্পের কাঁচামাল ‘ক্লে’র সন্ধান পাওয়া গেছে বঙ্গোপসাগরের প্রায় ৩০ থেকে ৮০ মিটার গভীরে । অগভীর সমুদ্রের ক্লে উত্তোলন করা যায় গেলে বাংলাদেশের সিমেন্ট শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। এছাড়াও সমুদ্র তলদেশে মহামূল্যবান ইউরেনিয়াম ও থোরিয়ামের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। বিশ্বে এ ধাতু দুটির চাহিদা কিরূপ তা সহজে অনুমেয়।
(১০) সমুদ্র নির্ভর অর্থনীতি থেকে যদি ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা যায়, তাহলে ভিশন ২০৪১ পূর্ণ করা সহজ হবে। ফলে আমরা এই সময়ের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছে যাব।
collected from fb post of Masud Raj
'ব্লু ইকোনমি' সময়ের আলোচিত টপিক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ খাতের মাধ্যমে চমকপ্রদ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে; সিঙ্গাপুর অন্যতম। ২০৪১ এর উন্নত বাংলাদেশ গঠনে সমুদ্রে পাওয়া ১,১৮,৮১৩ বর্গ কি. মি. এর যথাযথ ব্যবহারে সামুদ্রিক অর্থনীতি হয়ে উঠতে পারে ট্রামকার্ড। এ নিয়ে নিম্নোক্ত আলোকপাত।
(১) কিছুদিন আগে গৃহীত হয়েছে বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ বা ডেল্টা প্ল্যান-২১০০। এ মহাপরিকল্পনায় সমুদ্র অর্থনীতিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনায় নীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ৫ ধরনের কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে যার মধ্যে অন্যতম হলো সামুদ্রিক সম্পদের বহুমাত্রিক জরিপ দ্রুত সম্পন্ন করা। এর মাধ্যমে সরকার সমুদ্র অর্থনীতিকে কাজে লাগানোর জন্য প্রথম এবং প্রধান কাজটিই হাতে নিয়েছে।
(২) সমুদ্র বিজয়ের ফলে বাংলাদেশ যে অঞ্চলের মালিকানা পেয়েছে, সেখানে অন্তত চারটি ক্ষেত্রে কার্যক্রম চালানো হলে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ কোটি মার্কিন ডলার উপার্জন করা সম্ভব। ক্ষেত্র চারটি হলো তেল-গ্যাস উত্তোলন, মৎস্য সম্পদ আহরণ, বন্দরের সুবিধা সম্প্রসারণ ও পর্যটন। ‘ন্যাশনাল ওশেনোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউট’ বা নোয়ামি আয়োজিত এক প্রোগ্রামে বিশেষজ্ঞরা এ সম্পর্কে আলোচনা করেন।
(সূত্রঃ প্রথম আলো, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭)
(৩) সুস্থির সামুদ্রিক কার্যক্রমের নিমিত্তে বিশ্ব ব্যাংক কর্তৃক ব্লু প্রোগ্রামের ( PROBLUE) জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলারের ফান্ড গঠন করা হয়েছে। যার সাইনিং সম্পাদিত হয়েছে নভেম্বর ২০১৮ তে। বাংলাদেশে সামুদ্রিক খাতেও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের বিনিয়োগ সম্ভাবনা রয়েছে।
(৪) বঙ্গোপসাগর তীরে বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার ও থাই উপকূলে ১৪৫ কোটি মানুষের বাস। বাংলাদেশের অবস্থান কেন্দ্রে। ফলে এখানকার বিপুল অর্থনৈতিক সম্ভাবনার সুফল বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার ভালো সুযোগ রয়েছে।
(৫) বর্তমানে বাংলাদেশের ট্রলারগুলো উপকূল থেকে ৩৫-৪০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে মাছ আহরণ করে। কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চল ২০০ নটিক্যাল মাইল। আরও বিস্তৃত পরিসরে কাজ করে সমুদ্র অর্থনীতিতে দেশের অর্থনীতি সুদৃঢ় করার বিশেষ সুযোগ রয়েছে।
(৬) জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ( FAO) মতে, ২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বের যে চারটি দেশ মাছ চাষে বিপুল সাফল্য অর্জন করবে, তার মধ্যে প্রথম হচ্ছে বাংলাদেশ। এরপর থাইল্যান্ড, ভারত ও চীন। নতুন জলসীমার অধিকার পাওয়ায় ব্লু ইকোনমি প্রসারে বাংলাদেশের এ সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। তাই সমুদ্র খাতের এ সুযোগ লুপে নেয়াই এখন কাজ।
(৭) ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২১টি সদস্য দেশের সংগঠন 'ইন্ডিয়ান ওসেন রিম অ্যাসোসিয়েশন-IORA' এর সদস্য বাংলাদেশ। ব্লু ইকোনমি নিয়ে এ জোটের বিভিন্ন দেশ কাজ করছে। জোটের সদস্য থাইল্যান্ড বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মেরিন পণ্য উৎপাদনকারী দেশ। বাংলাদেশ অন্যদেশগুলোর সাথে একসাথে সামুদ্রিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, গবেষণা ও বাণিজ্য সহ বিভিন্নখাতে কাজ করতে পারে। মায়ানমারের সমস্যায় (মানব পাচারে) আক্রান্ত এ জোটের ৩ রাষ্ট্র বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া একসাথে কাজ করার সুযোগ তৈরী হয়েছে।
(৮) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (DCCI) হিসাব মতে, বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ৭০ শতাংশ আসে সমুদ্রে মাছ আহরণ, সামুদ্রিক খাদ্য ও বাণিজ্যিক সমুদ্র পরিবহন হতে। প্রায় ৩ কোটি লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এসব কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এর মধ্যে কেবল সামুদ্রিক মাছ আহরণে নিয়োজিত আছে ৫০ লাখ মানুষ। এ খাতে আধুনিকায়ন হলে এ সংখ্যা বাড়া কেবল সময়ের ব্যাপার।
(সূত্রঃজনকণ্ঠ, ২৭ জুলাই ২০১৭)
(৯) সিমেন্ট শিল্পের কাঁচামাল ‘ক্লে’র সন্ধান পাওয়া গেছে বঙ্গোপসাগরের প্রায় ৩০ থেকে ৮০ মিটার গভীরে । অগভীর সমুদ্রের ক্লে উত্তোলন করা যায় গেলে বাংলাদেশের সিমেন্ট শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। এছাড়াও সমুদ্র তলদেশে মহামূল্যবান ইউরেনিয়াম ও থোরিয়ামের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। বিশ্বে এ ধাতু দুটির চাহিদা কিরূপ তা সহজে অনুমেয়।
(১০) সমুদ্র নির্ভর অর্থনীতি থেকে যদি ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা যায়, তাহলে ভিশন ২০৪১ পূর্ণ করা সহজ হবে। ফলে আমরা এই সময়ের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছে যাব।
collected from fb post of Masud Raj
No comments:
Post a Comment